›জেলা›টানা ৪০দিন জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ে সাইকেল উপহার
টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার ৩০০ শিশু-কিশোরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেরাত প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করা বিজয়ীদের মধ্যেও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

বুধবার বিকেলে আমিরাবাদ বিসি লাহা স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম সবার উপস্থিতিতে শিশু-কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
৪০ দিনের নামাজের এই কর্মসূচীতে নবাবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৭০০ জন শিশু-কিশোর অংশ নেয়। এর মধ্যে ৩০০ শিশু-কিশোর পেয়েছে সাইকেল ও আরও বেশ কয়েকজনকে গাছসহ বিভিন্ন ধরনের উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আর কেরাত প্রতিযোগীদের মধ্যেও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সোনাগাজী-দাগনভূঞা সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার তছলিম হুসাইন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানিয়া আক্তার লুবনা, হোসাফ গ্রুপের পরিচালক মাবরুর হোসাইন,ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন,যুবদল নেতা আবদুল হালিম,আজিম উদ্দিন প্রমূখ। এ সময় মসজিদের ইমাম, খতিব,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,শিক্ষার্থী সহ স্থানীয় মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল আলম বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ পুরস্কৃত করবেন। আমরা শিশু-কিশোরদের নামাজে আগ্রহী করতে এ উদ্যোগ নিয়েছি। শুধু নবাবপুর ইউনিয়ন নয়, আশপাশের গ্রাম ও শহরেও এটা ছড়িয়ে যাক। তাতে কোমলমতি শিশু-কিশোরেরা মুঠোফোনের আসক্তি, মাদক, ইভটিজিং ও সামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকবে। ভবিষ্যতেও এমন মহৎ কাজ অব্যাহত রাখা হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কিছু দিন আগে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ৮-১৮ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের মসজিদ ও নামাজমুখী করতে টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করলে প্রত্যেককে সাইকেল পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত টানা ৪০ দিন নামাজ আদায়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়। এতে নবাবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার সাত শতাধিক জন শিশু-কিশোর তাদের নাম নিবন্ধন করে অংশ নেয়। টানা ৪০ দিন (২০০ ওয়াক্ত) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতে আদায় করতে সক্ষম হয়েছে ৩০০ শিশু-কিশোর। বাকিরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করলেও মাঝেমধ্যে জামাতে আদায় করতে পারেনি। ঘোষণা অনুযায়ী, ৩০০ শিশু-কিশোরকে একটি করে সাইকেল উপহার দেওয়া হয়েছে এবং বাকি শিশু-কিশোরকে দেওয়া হয় উপহারসামগ্রী। তবে প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে ক্রেস্ট।
২৯৪ শিশু- কিশোর পুরস্কার হিসেবে বাইসাইকেল পেয়ে আনন্দে উচ্চসিত হয়ে বলে, আমরা আগামী দিনগুলোতে একইভাবে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করব।
সাইকেল পুরস্কার পাওয়া কিশোর আবদুর রহমান বলে, ‘টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় এখন মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় নয়, মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে। জীবনের বাকি সময় যেন জামাতে নামাজ পড়তে পারি।’
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের সহায়তায় এমন উদ্যোগে তিনি খুব আনন্দিত হয়েছেন। সবার উদ্যোগে ও পরিষদের আয়োজনে কিশোরদের নামাজে উদ্বুদ্ধ করতে এই আয়োজন। শিশু-কিশোরেরা যেন মুঠোফোনে আসক্তি, মাদক, ইভটিজিং ও সামাজিক অবক্ষয় থেকে দূরে থাকে, এ জন্য এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।’