0201251735807594appweb-logo.png
Loading...

ভারত


ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বেশ কয়েকদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছে তীব্র গরম। রীতিমত সেদ্ধ হওয়া জোগাড়। ইতোমধ্যে তাপমাত্রার পারদ হাফসেঞ্চুরি পার করে ফেলেছে। বয়ে চলা তাপপ্রবাহের মধ্যে, রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র গরমের মধ্যে হিট ইনডেক্সে তাপমাত্রা ৫১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর এই অ্যালার্ট জারি করা হয়। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, রাজধানীতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দিল্লিতে প্রচণ্ড গরমের দাপটে বুধবার রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মূলত শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ৪০.৯ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এর সঙ্গে আর্দ্রতা যোগ হয়ে তৈরি হওয়া হিট ইনডেক্স (তাপমাত্রা অনুভব করার মাত্রা) এক লাফে পৌঁছেছে ৫১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

এনডিটিভি বলছে, রেড অ্যালার্ট মানে হলো, জনসাধারণকে অবিলম্বে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে—যেমন বেশি পানি খাওয়া, রোদ এড়িয়ে চলা এবং দুপুরের সময় বাইরে যাওয়া এড়ানো।

খবরে বলা হয়, বুধবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ভারতের এই রাজধানীর সবচেয়ে বেশি গরম ছিল আয়ানগরে, সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর পালাম (৪৪.৫), রিজ (৪৩.৬), পিতমপুরা (৪৩.৫), লোদি রোড (৪৩.৪), ময়ূর বিহার (৪০.৯) এবং সফদরজং (৪৩.৩) ছিল অন্যান্য গরম অঞ্চল।

হিট ইনডেক্সে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হওয়ার পর ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করে প্রতিদিনের হিট ইনডেক্সের মান পরিবর্তিত হয়। যদিও এই হিট ইনডেক্স ভারতীয় আবহাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই করা হয়নি এবং এর কোনো সরকারি রেকর্ডও রাখা হয় না।

আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, রাজধানী দিল্লিতে তাপপ্রবাহের (হিটওয়েভ) পরিস্থিতি চলছে, যদিও বুধবার কেবল আয়ানগরেই তাপপ্রবাহের অবস্থা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দিন তিনটি স্টেশনে এমন অবস্থা ছিল।

আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১৩ জুন পর্যন্ত এই ভয়াবহ গরমের ধারা অব্যাহত থাকবে। এরপর একটি পশ্চিমী ঝড় উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রবেশ করতে পারে, যা দিল্লিতে হালকা বৃষ্টি ও বজ্রপাত নিয়ে আসতে পারে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতরের (আইএমডি) বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দিল্লিতে বর্তমান তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি, যার ফলে তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবারেও তাপমাত্রা ৪৩-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার আশঙ্কা রয়েছে, সঙ্গে ৪০-৬০ কিমি গতির দমকা হাওয়া এবং সন্ধ্যা বা রাতে হালকা বৃষ্টি বা বজ্রঝড় হতে পারে।

আইএমডি-এর জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. নরেশ কুমার বলেন, “তীব্র গরম বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে। তবে ১৩ জুন রাতে যে পশ্চিমী ঝড় আসবে, তা তাপপ্রবাহ কমাতে সাহায্য করবে।” সূত্র: এনডিটিভি
 


বেশি পরিমাণে গাছ কাটা মানুষ হত্যার চেয়েও খারাপ বলে উল্লেখ করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। 

অবৈধভাবে কেটে ফেলা প্রতিটি গাছের জন্য এক ব্যক্তিকে ১ লাখ রুপি করে জরিমানা করার সময় দেশটির শীর্ষ আদালত এই মন্তব্য করে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। 

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং উজ্জ্বল ভূঁইয়ার একটি বেঞ্চ সুরক্ষিত তাজ ট্র্যাপিজিয়াম জোনে ৪৫৪টি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে একজন ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে এই পর্যবেক্ষণ দেন। 

ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের এই বেঞ্চ বলেছে, পরিবেশগত বিষয়ে কোনো দয়া দেখানো উচিত নয়। বিপুলসংখ্যক গাছ কাটা একজন মানুষকে হত্যা করার চেয়েও খারাপ। শীর্ষ আদালত বলেছে, অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে কেটে ফেলা ৪৫৪টি গাছের তৈরি সবুজ আচ্ছাদন পুনরায় তৈরি বা পুনরুজ্জীবিত করতে কমপক্ষে ১০০ বছর সময় লাগবে। 

এছাড়া আদালত কেন্দ্রীয় ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটির (সিইসি) প্রতিবেদন গ্রহণ করেছে, যেখানে মথুরা-বৃন্দাবনের ডালমিয়া ফার্মে শিব শঙ্কর আগরওয়াল নামে এক জনের ৪৫৪টি গাছ কাটার জন্য গাছপ্রতি ১ লাখ রুপি করে জরিমানা করার সুপারিশ করা হয়েছে। 

আগরওয়ালের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী মুকুল রোহাতগি যুক্তি দেন, তিনি ভুল স্বীকার করেছেন কিন্তু আদালত জরিমানার পরিমাণ কমাতে অস্বীকৃতি জানান। 

আদালত বলেছে, আগরওয়ালকে কাছাকাছি স্থানে বৃক্ষরোপণ করার অনুমতি দেওয়া উচিত এবং তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অবমাননার আবেদনটি কেবল সম্মতি দেওয়ার পরেই নিষ্পত্তি করা হবে। এর আগে শীর্ষ আদালত তার ২০১৯ সালের আদেশও প্রত্যাহার করেছে, যা তাজ ট্র্যাপিজিয়াম জোনের মধ্যে বনের মধ্যে নয় এমন এবং ব্যক্তিগত জমিতে গাছ কাটার জন্য পূর্ব অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাতিল করেছিল।
 


বাংলাদেশি নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের কলকাতায় নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন বিজেপির এক সংসদ সদস্য।

ফাইল ছবি:নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন

সোমবার রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ সমীক ভট্টাচার্য এ আহ্বান জানান।পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত এই সাংসদ বলেন, মৌলবাদী শক্তির প্রতিবাদের কারণে নাসরিনকে তাঁর জন্মভূমি বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছিল।

তসলিমা নাসরিন তাঁর উপন্যাস ‘লজ্জা’ প্রকাশের পর বাংলাদেশে রক্ষণশীলদের আক্রমণের শিকার হন। ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের ক্রমাগত হুমকির মুখে ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন এবং পরে ভারতে আশ্রয় নেন।

২০০৪ সালে নাসরিন কলকাতায় আসেন এবং শহরটিকে তাঁর সাহিত্য ও ব্যক্তিগত জীবনের জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে মনে করেন। তবে ২০০৭ সালে কলকাতায় রক্ষণশীল হিন্দু গোষ্ঠীগুলোর প্রবল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে তিনি আবারও শহর ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর থেকে তিনি দিল্লি ও অন্যান্য শহরে বসবাস করছেন।

 রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখার সময় বিজেপি সাংসদ সমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘তসলিমা নাসরিন কলকাতাকে খুব পছন্দ করেন এবং সেখানে ফিরে যেতে চান। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, তাঁর কলকাতায় নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা হোক, যাতে তিনি তাঁর লেখালেখির ওপর মনোযোগ দিতে পারেন।’

সমীক অভিযোগ করেন, অতীতে এক কংগ্রেস নেতা জনসাধারণের মধ্যে নাসরিনের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি করেছিলেন। পরে ওই নেতা কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন।

তসলিমা নাসরিন বর্তমানে ভারতে অস্থায়ী আবাসিক অনুমতির ভিত্তিতে বসবাস করছেন। প্রতি বছর তাঁকে ভিসার মেয়াদ নবায়ন করিয়ে নিতে হয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর আবাসিক অনুমতির মেয়াদ আরও বাড়ায়। তবে দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় ফিরে আসার চেষ্টা করছেন তিনি।
 


১৪০ কোটি মানুষের আবাসস্থল ভারতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষের কাছে কোনো ধরনের বিবেচনামূলক পণ্য বা সেবার পেছনে ব্যয় করার ক্ষমতা নেই বলে নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অর্থাৎ জীবন ধারনের ন্যুনতম ব্যয়ের মধ্যেই তাদের জীবন সীমাবদ্ধ।

ব্লুম ভেঞ্চারস প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শীর্ষ ১০ শতাংশ লোক হলো ভোগ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চালিকার প্রাথমিক গোষ্ঠী। এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির ধনী জনসংখ্যা বৃদ্ধি না পেলেও, যারা আগে থেকে ধনী তারা আরও ধনীতে পরিণত হচ্ছে।

প্রতিবেদনে অনুসারে, ৩০ কোটি মানুষ 'উদীয়মান' বা 'উচ্চাকাঙ্ক্ষী' ভোক্তা হলেও সম্প্রতি তারা ব্যয় করতে অনিচ্ছুক হয়ে পড়ছেন। অবশ্য ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধার কারণে ধীরে ধীরে খরচের পরিমাণ বাড়াচ্ছেন তারা।

এই বিষয়গুলো সারা দেশের বেশিরভাগ ভোক্তা বাজারকে পরিবর্তন করতে বাধ্য করে। বিশেষত 'প্রিমিয়ামাইজেশন' বা উচ্চ মূল্যের পণ্যের প্রবণতা বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো বৃহৎ সংখ্যক ভোক্তার জন্য পণ্যের বাজারের পরিবর্তে ধনীদের জন্য ব্যয়বহুল, আপগ্রেড পণ্যগুলোতে দ্বিগুণ মননিবেশ করছে।

প্রতিবেদন বলছে, আল্ট্রা-লাক্সারি হাউজিং এবং প্রিমিয়াম ফোনের বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট। সাশ্রয়ী মূল্যের দোকানগুলো এখন ভারতের সামগ্রিক বাজারের মাত্র ১৮ শতাংশ, যা পাঁচ বছর আগে ৪০ শতাংশ ছিল। ব্র্যান্ডেড পণ্যগুলো বাজারের একটি বড় অংশ দখল করছে।

প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক সাজিথ পাই বিবিসিকে জানান, যেসব কোম্পানি এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে তারা ফুলেফেঁপে উঠেছে। যারা সাধারণ পণ্যের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেন বা প্রিমিয়াম পণ্যের দিকে তেমন নেই, তারা বাজার হারিয়েছে।

এই রিপোর্টের ফলাফল দীর্ঘদিনের এই ধারণাকে আরও জোরদার করে, মহামারী-পরবর্তী সময়ে ভারতের পুনরুদ্ধারে ধনীরা আরও ধনী হয়েছে, দরিদ্ররা ক্রয়ক্ষমতা ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি মহামারীর আগে থেকেই শুরু হয়েছিল।

ভারত ক্রমশ আরও অসম হয়ে উঠছে, শীর্ষ ১০% ভারতীয়রা এখন জাতীয় আয়ের ৫৭.৭ শতাংশের নিয়ন্ত্রক, যেখানে ১৯৯০ সালে ছিল ৩৪ শতাংশ।

এদিকে, সর্বশেষ ভোগ-মন্দা কেবল ভারতের ক্রয়ক্ষমতাকেই ধ্বংসই করেনি, আর্থিক সঞ্চয় এবং জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঋণগ্রস্ততাকে আরও গভীর করেছে। কোভিড মহামারির পর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সহজ ঋণ দেওয়ার বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মার্সেলাস ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজারদের সংকলিত তথ্য অনুসারে, ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণি - যা ভোক্তা চাহিদার জন্য একটি প্রধান উৎস ছিল - সেটিও সঙ্কুচিত হচ্ছে। করদাতা জনসংখ্যার মধ্যবিত্ত ৫০ শতাংশের আয় গত এক দশকে স্থবির হয়ে পড়েছে। এর অর্থ -  প্রকৃত অর্থে আয় অর্ধেক হয়ে গেছে।

আর্থিক হাতুড়ি মধ্যবিত্তের সঞ্চয়কে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বারবার তুলে ধরেছে যে, ভারতীয় পরিবারগুলোর নেট আর্থিক সঞ্চয় ৫০ বছরের সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য এবং পরিষেবাগুলো সামনের বছরগুলোতে একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে পারে।


ভারতের উত্তরপ্রদেশে ১৬৮ বছরের পুরোনো একটি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। র‍্যাপিড রেল ট্রানজিট নেটওয়ার্কের জন্য প্রায় পৌনে দুইশো বছরের পুরোনো এই মসজিদটি ভাঙা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

২৩ ফেব্রুয়ারি পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মুসলিম মিরর এবং সিয়াসত ডেইলি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিজেপি-শাসিত উত্তর প্রদেশে মুসলিম ধর্মীয় স্থানগুলোর পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যটির কর্তৃপক্ষ মিরাটে ১৬৮ বছরের পুরোনো একটি মসজিদকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করে দিল্লি রোডে অবস্থিত ঐতিহাসিক ধর্মীয় এই স্থাপনাটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়। উত্তর প্রদেশ কর্তৃপক্ষ বিতর্কিত এই পদক্ষেপের পক্ষেই কথা বলেছে। তাদের দাবি, মসজিদটি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল পরিবহন কর্পোরেশন (এনসিআরটিসি)-এর একটি র‌্যাপিড রেল সিস্টেম (আরআরটিএস) নির্মাণে বাধার সৃষ্টি করেছিল।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনও ধর্মীয় এই স্থাপনাটি ধ্বংসের অভিযানের পক্ষে কথা বলেছে। তারা বলছে, র‌্যাপিড রেল নেটওয়ার্কের বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই মসজিদটি অপসারণ করা হয়েছে।

এই বিষয়ে রাজ্যটির মিরাট শহরের পুলিশ সুপার (এসপি) আয়ুশ বিক্রম সিং বলেছেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে বৈঠকের পরে মসজিদটি ধ্বংসের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

তার দাবি, “অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সিটি, এনসিআরটিসি কর্মকর্তা, মসজিদের ইমাম এবং অন্যান্য সদস্যসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি বৈঠকের পরে এই মসজিদটি ধ্বংস করা হয়েছে।”

তবে ওই এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা এই মসজিদটি ধ্বংসের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, মুসলিম ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে একের পর এক ধ্বংস অভিযান আসলে মুসলিম ধর্মীয় সম্পত্তিগুলোকে টার্গেট করে রাজ্য সরকারের চলমান প্রচেষ্টার একটি বিস্তৃত প্যাটার্নের অংশ।

এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে অ্যাডভোকেট শের আফগান বলেন, “এটি সম্পূর্ণ অবিচার”। সুলতান আখতার নামে অন্য একজন স্থানীয় মুসলিম একই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, “ইসরায়েল যেমন ফিলিস্তিনে অবকাঠামো ধ্বংস করে, ঠিক তেমনই যোগী আদিত্যনাথের সরকার মুসলমানদের সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করছে।”

এর আগে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তরপদেশ কর্তৃপক্ষ হাতা নগরের মাদানী মসজিদ ভেঙে দেয়। ডিএসপি কাশ্য কুন্দন সিং এবং বিএসএফ বাহিনীসহ পুলিশ বাহিনীর বিশাল সংখ্যক সদস্যের নজরদারিতে বেশ কয়েকটি বুলডোজার ব্যবহার করে ওই মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল।


ইউটিউবের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে বর্তমানে অনেকেই সাবলম্বি হচ্ছেন। এটি এখন অনেকের প্রধান পেশাও। এর মাধ্যমে শহর বা গ্রামের বিভিন্ন বয়সের কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের এখন দেখা যায় বিশ্বজুড়ে। কিন্তু ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে এমন এক গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামের প্রায় সবাই ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর। 

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের তুলসী গ্রামের প্রায় সবাই এখন ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তারা ভিডিও তৈরি করেন গ্রামের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি, সামাজিক সমস্যা নিয়ে। সেগুলোতে হাজার হাজার লাইক, ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার পান। ইউটিউবের আয় তাদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক বদল এনেছে।

এ গ্রামের আয়ের মূল উৎস ইউটিউব। গ্রামের মানুষদের হাতে হাতে মোবাইল। শুধু বিনোদনের মধ্যেই এর ব্যবহার আটকে না রেখে এটিকেই বরং গ্রামটির বেশির ভাগ মানুষ তাদের আয়ের অন্যতম উৎস করে নিয়েছেন।

জানা যায়, একসময় তুলসী গ্রামের মানুষদের জীবন ছিল দারিদ্র্যপীড়িত। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তা মেটানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। আর এখন সে গ্রামের অধিবাসীরা ইউটিউবের মাধ্যমে নিজের জীবনযাত্রা দেখিয়ে রোজগার করছেন। গ্রামের পরিবেশ এবং জীবনযাপনকে নিয়ে তৈরি করা ভিডিওগুলো এখন শহরের মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয়। গ্রামের প্রকৃত জীবনে একধরনের সাদাসিধে সৌন্দর্য রয়েছে এসব কনটেন্টে, যা শহরের মানুষদের কাছে আকর্ষণীয়।

তবে এই পরিবর্তন একদিনে আসেনি। করোনা মহামারির সময় থেকে গ্রামবাসী ইউটিউবের দিকে আগ্রহী হতে শুরু করেন। বাড়িতে বসে ইউটিউব ভিডিও দেখতে দেখতে তারা নিজেরাও ভিডিও তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেন। সে চিন্তা থেকে ইউটিউব তাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে ওঠে। এখন গ্রামের প্রায় সবাই সামাজিক এই মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে আয় করছেন।

গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই এখন মোবাইল এবং ট্রাইপড রয়েছে। কেউ কেউ ভিডিও তৈরির আরও উন্নত সরঞ্জাম কিনেছেন ভিডিও করার জন্য। গ্রামবাসীর এই স্বতঃস্ফূর্ত ভিডিও তৈরির কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তুলসী গ্রামকে ‘ভারতের ইউটিউব ক্যাপিটাল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

তুলসী গ্রামের ইউটিউব কনটেন্টের আকর্ষণীয় বিষয় হলো, তাদের নিজেদের প্রকৃত জীবন এবং গ্রামীণ পরিবেশ। কোনো রকম মেকআপ বা সাজগোজ ছাড়াই নিজেদের জীবন ফুটিয়ে তুলছেন তুলসী গ্রামের মানুষেরা।

তুলসী গ্রাম এখন শুধু একটি গ্রাম নয়, বরং ইউটিউবের দুনিয়ায় এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। করোনা-পরবর্তী সময়ে ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের জীবনে এসেছে নতুন এক অধ্যায়। এটি তাদের জন্য সাফল্য এবং অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করেছে।

 


সংসারের অভাব-অনটন ঘোচাতে স্বামীকে কিডনি বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন স্ত্রী। স্ত্রীর পরামর্শে সেই কাজই করেন যুবক। পরে সেই টাকাই হাতিয়ে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন ওই যুবকের স্ত্রী।খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের।

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার সাঁকরাইলের ধুলাগড়ির হাটতলা এলাকায়। স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পিন্টু বেজ নামে ৩৯ বছরের যুবক। 

তার অভিযোগ, ভবিষ্যতে নিজেদের নাবালিকা মেয়ের পড়াশুনা ও বিয়ের জন্য বারবার বলে স্বামীকে একটা কিডনি বেচতে অনুরোধ করেন স্ত্রী সুপর্ণা বেজ। স্ত্রীর এমন অনুরোধের পর স্বামী কিডনি বিক্রি করতে রাজি হয়।

এক বছরের চেষ্টার পর তিন মাস আগে একজন ‘ক্রেতা’ খুঁজে পান তারা। ১০ লাখ রুপির বিনিময়ে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করেন স্বামী। 
তিনি আশা করেছিলেন, এতে পরিবারের দারিদ্র্য কিছুটা হলেও কমবে এবং মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা সহজ হবে। কিন্তু স্বামীর কিডনি বিক্রির পর ফেসবুকে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া এক ব্যক্তির সঙ্গে ১০ লাখ রুপি নিয়ে পালিয়ে যান ওই স্ত্রী।

 তবে পিন্টু বেজ তার স্ত্রীর নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করেন এবং তারপর স্ত্রীকে খুঁজে পেতে হাইকোর্টে মামলা করেন। তবে তদন্তকারীদের কাছে ওই নারী লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে, তিনি স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন। তার প্রেমিক এবং তিনি এখন স্বামী–স্ত্রীর মতো থাকছেন, কেউ তাকে জোর করে কিছু করায়নি। 

এরপর  স্ত্রীর কাছ থেকে নিজের টাকা পয়সা আদায় করতে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।  তবে এই ঘটনায় আইনজীবীদের বক্তব্য, গোটা ঘটনায় কিডনি বেচে টাকা পাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে, যা আইনত দণ্ডনীয় এবং সে ক্ষেত্রে ৩৯ বছরের ওই ব্যক্তি বেআইনি কাজের অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন।

তবে আইনজীবীদের অন্য একটি অংশের অভিমত, মামলাকারীকে প্রথম থেকে ভুল বুঝিয়েছিলেন তার স্ত্রী। সুতরাং এখানে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা ওই ব্যক্তিকে ঘটনার শিকার বলে ধরে নেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

তবে ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী এইভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করায় যথারীতি পিন্টু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। দুজনে প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন। পিন্টু বাবু একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেই টাকায় কোনোমতে সংসার চলছিল । এই মধ্যেই স্ত্রী সুপর্ণা ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমে পড়েন ব্যারাকপুরের সুভাষ কলোনির বাসিন্দা এক যুবকের। পেশায় রং মিস্ত্রি । 

গত শুক্রবার পিন্টু বাবু তার মা কল্পনা বেজ ১২ বছরের মেয়ে কে নিয়ে ব্যারাকপুরের সুভাষ কলোনিতে স্ত্রীকে আনতে যান। স্ত্রী আসবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। টাকা প্রসঙ্গ তোলায় তার প্রেমিক জানান, আইনের মাধ্যমে যা হওয়ার হবে। পরে খালি হাতেই ফিরতে হয় পিন্টু বেজকে। এখন তিনি বুঝতে পারেন কিডনি বিক্রির জন্য তার স্ত্রী প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করেই এই কাজ করেছেন। 


গত বুধবার রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজ বাসভবনে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর ছুরি দিয়ে হামলা চালানো হয়। এই ঘটনায় সাইফ গুরুতর আহত হন।

তিন দিন পর, মুম্বাই পুলিশ মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ নামের ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি বাংলাদেশি নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার কাছে কোনো ভারতীয় নথি পাওয়া যায়নি। আদালত শেহজাদকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, সাইফের বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ায় শেহজাদ তাকে ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 


সাইফ আলী খান বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল। এই হামলার ঘটনায় বলিউডে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। 


নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে চাওয়ায় বাবার গুলিতে প্রাণ হারালেন এক মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র শহরের গোলা কা মন্দির এলাকায়।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতেই মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেন তার বাবা মহেশ গুর্জার। নিহত মেয়ের নাম তনু গুর্জার।


পরিবারের পছন্দের ছেলের সঙ্গে চার দিন পর তনুর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তনু এতে রাজি না হয়ে নিজের প্রেমিক ভিকিকে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মহেশ গুর্জার এই মর্মান্তিক কাজটি করেন।


ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে তনু একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। ৫২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘পরিবার আমাকে তাদের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করার জন্য জোর করছে। কিন্তু আমি ভিকি নামে একটি ছেলেকে ভালোবাসি এবং তাকে বিয়ে করতে চাই। পরিবার প্রথমে এটি মেনে নিলেও পরে অস্বীকার করে। তারা আমাকে প্রতিদিন মারধর করে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার কিছু হলে এর জন্য আমার পরিবার দায়ী থাকবে।’

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ধর্মবীর সিংয়ের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তনুর বাড়িতে যান। সেখানে পরিস্থিতি সমাধানের জন্য পঞ্চায়েতের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মহেশ গুর্জার দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তনুর বুকে গুলি চালান। একই সময় তার চাচাতো ভাই রাহুল তনুর কপাল ও ঘাড়ে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তনুর মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর মহেশ গুর্জারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র জব্দ করে। তবে রাহুল পালিয়ে গেছেন, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তনুর প্রেমিক ভিকি উত্তর প্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা। গত ছয় বছর ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। তনু চেয়েছিলেন এই সম্পর্ককে বৈধতা দিতে, কিন্তু পরিবারের আপত্তি তার জীবনের করুণ পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পুলিশ জানিয়েছে, তনুর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা পারিবারিক সিদ্ধান্তের চাপ এবং সামাজিক বিধিনিষেধের ফলে ঘটে যাওয়া সহিংসতার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।