0201251735807594appweb-logo.png
Loading...

মধ্যপ্রাচ্য


সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির এক লটারিতে কপাল খুলেছে দুই বাংলাদেশি প্রবাসীর। যদিও তাদের দুজনের কেউই আবার আবুধাবিতে থাকেন না।

কাতার ও ওমানে কর্মরত এই দুই বাংলাদেশির প্রত্যেকে দেড় লাখ দিরহাম করে জিতেছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। অর্থাৎ, দুজনে ৯ কোটি টাকারও বেশি অর্থ পেয়েছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই বাংলাদেশি প্রবাসীর ভাগ্য খুলেছে আবুধাবির বিগ টিকিট র‍্যাফেল ড্রতে। ওমান ও কাতারে বসবাসকারী এই দুই প্রবাসী ‘বিগ টিকিটের’ সাপ্তাহিক ই-ড্রয়ে প্রত্যেকে জিতেছেন দেড় লাখ দিরহাম করে।

মিনহাজ চৌধুরী নামের ৩৮ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ওমানে থাকছেন ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে। তিনি যখন বিগ টিকিট থেকে ফোন পান, তখন ভেবেছিলেন হয়তো গ্র্যান্ড প্রাইজ জিতেছেন। পরে জানতে পারেন এটি সাপ্তাহিক ড্রয়ের পুরস্কার। এতেও তিনি আনন্দিত।

মিনহাজ চৌধুরী বলেন, ‘ই-মেইল পাওয়ার পরই আমি নিশ্চিত হয়েছি। যদিও এটি বড় পুরস্কার ছিল না, তবে এটি বড় জয়ের প্রথম ধাপ।’

চার বছর ধরে টিকিট কিনছেন বলে জানান তিনি। মিনহাজ ও তার ১০ বন্ধু মিলে একসঙ্গে টিকিট কেনেন। এই অর্থে নতুন বাড়ি তৈরি এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। তিনি টিকিট কেনা চালিয়ে যাবেন।

মিনহাজ বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি যে জিতব, কিন্তু আমি জিতেছি।’

এদিকে, কাতারে থাকা ২৯ বছর বয়সী রবিউল হাসানও ভাগ্যবানদের একজন। চট্টগ্রামের এই গাড়িচালক ৮ বছর ধরে কাতারে আছেন। প্রায় ৩ বছর আগে ফেসবুকে বিগ টিকিটের বিজ্ঞাপন দেখে তিনি উৎসাহিত হন। এরপর থেকে চার বন্ধুর সঙ্গে মিলে তিনি টিকিট কিনছেন।

বিজয়ী হওয়ার খবর শুনে রবিউল আনন্দে আত্মহারা। তিনি বলেন, ‘এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমি উত্তেজনায় লাফাতে পারতাম।’ 

রবিউল হাসান জানান, তিনি তিন বছরের বেশি সময় ধরে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে পারেননি। এবার এই অর্থে তিনি পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে চান এবং অভাবী মানুষকে সাহায্য করতে চান।

বিগ টিকিটের সাপ্তাহিক ই-ড্রয়ে প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন দেড় লাখ দিরহাম করে জেতেন। এপ্রিল মাসে কেনা প্রতিটি টিকিট এই ড্রয়ের জন্য বিবেচিত হয়।
 


আমরা যখন রাতে ঘুমাতে যাই, তখন আগে একটু চিন্তা করি—আগামীকাল কী করবো, কোথায় যাবো, কী খাব !আর তারপর নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু পৃথিবীর আরেক প্রান্তে, এমন এক নগরী আছে, যেখানে মানুষের ঘুম ভাঙে বোমার গর্জনে। সেই গর্জনে কেঁপে ওঠে মাটি, ছিন্নভিন্ন হয় শরীর, আর রক্তের গন্ধ মিশে যায় বাতাসে। সেই নগরীর নাম গাজা।

যেখানে দুধের শিশুও রক্ষা পায় না ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন থেকে। একসময় যেখানকার মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতো, আজ তারা বন্দী এক খাঁচার ভেতর। তারা চায় মুক্তি, চায় স্বাধীনতা। আর আমরা? আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিই, প্রতিবাদে স্ট্যাটাস লিখি, তারপর জীবন চালিয়ে যাই আগের মতোই।


 

মানচিত্রের দিকে তাকালে বুক কেঁপে ওঠে—চারপাশে এতগুলো মুসলিম দেশ থাকা সত্ত্বেও ফিলিস্তিন আজ এতটাই একা, এতটাই অসহায়। আল্লাহ ছাড়া তাদের আর কেউ নেই। শুনতে এতোটাই খারাপ লাগে যে এতো গুলো শক্তিশালী মুসলিম দেশ থাকার পরেও তারদের দোয়া করতে হয় ইমাম মাহদির আগমনের। আর তারা তাকিয়ে থাকে, যদি কোনো ভাই এসে দাঁড়ায় তাদের পাশে। অন্তত কেউ যদি আসে ! কিন্তু কেউ তো আসে না। কেউ না।

তাদের হাহাকের কান্না আর চিৎকারে আমার আপনার ভিতর টা কেপে উঠলেও যাদের মন কেপে উঠার দরকার ছিল তারা দুনিয়া নিয়ে ব্যাস্ত। কিন্তু দেখুন ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। ভারত গোপনে সামরিক সহায়তা পাঠায়। আমেরিকা তো খোলাখুলিই অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে। আর আমাদের কিছু নেতা যেন চোখ থাকতেও অন্ধ! তাদের এই অন্ধত্ব কি শুধুই নির্বাকতা, নাকি এর পেছনে আছে কোনো গভীর রহস্য?

চলুন, রহস্য খুঁজি।

আরব দেশগুলো—তাদের মূল আয় তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর সেই তেলের বড় ক্রেতা আমেরিকা ও ইউরোপ। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে আরব দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু গোপনে কয়েকটি মুসলিম দেশ গাদ্দারি করেছিল বলে শোনা যায়।

ফলাফল?
ইসরায়েলের বিজয় আর ফিলিস্তিনের রক্তমাখা পরাজয়। আজ সেই আরব দেশগুলো বিলাসিতায় ডুবে আছে। দুনিয়ার সবচেয়ে উঁচু ভবন, সবচেয়ে দামি হোটেল, সবচেয়ে ঝলমলে শপিং মল—সবই আছে তাদের কাছে। তারা ভাবে, যুদ্ধ শুরু হলে তাদের দালান ভেঙে যাবে, বাজার হারাবে, ক্ষমতা হারাবে। তাই মুখে নীরবতা, চোখে অন্ধকার।


 

কিন্তু তারা ভুলে গেছে মুসলিম জাতির গর্বিত অতীত। যেখানে মুসলমানরা একসাথে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আজ সেই বুক ভরে গেছে বিলাসিতা আর স্বার্থে। কিন্তু মনে রাখতে হবে—এই দুনিয়া চিরস্থায়ী নয়। একদিন হিসাব হবে। একদিন প্রত্যেক রক্তবিন্দুর জবাবদিহি হবে। তখন আর কোনো সুউচ্চ টাওয়ার, বিলাসবহুল গাড়ি কিংবা বিদেশি মুদ্রা কাউকে রক্ষা করতে পারবে না।


তাই এখনই সময়—ঘুম ভাঙার, প্রশ্ন করার, দাঁড়িয়ে যাওয়ার। আজ যদি আমরা চুপ থাকি, কাল হয়তো আমাদের গল্পও হবে ফিলিস্তিনের মতোই—রক্ত আর কান্নার ইতিহাস।


 


 


যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়েছে ইসরায়েল। সিরিজ হামলায় প্রাণহানির শিকার হয়েছেন দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।

এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডজুড়ে বিমান হামলা শুরু করেছে।

চিকিৎসাবিদদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরাইলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।

আলজাজিরার সরাসরি সম্প্রচারিত আপডেটে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরাইলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্যান্য আরও অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় এটিই ইসরাইলের সবচেয়ে বড় হামলা।

এদিকে আল জাজিরা আরবির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকার উত্তরে অবস্থিত গাজা সিটিতে ইসরাইলি বিমান হামলার ফলে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং আরও ৫০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গাজার মধ্যাঞ্চলের আল-দারাজ পাড়া শহরে বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থল আল-তাবি’ইন স্কুলে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ও বোমা হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

এছাড়াও দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের পশ্চিমে মাওয়াসি এলাকায় তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের ওপর ইসরাইলি হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও হামলা শুরু হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদক বারাক রভিদের মতে, হামাস যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর ইসরাইল গাজায় আবারও সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে।

ছয় সপ্তাহ ধরে চলা প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে ইসরাইল প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ইসরাইল এবং হামাস মধ্যস্থতামূলক আলোচনা শুরু করেছিল।

এছাড়া ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজায় ব্যাপকভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। তারা বলেছে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশে (ইসরাইলি সামরিক বাহিনী) এবং শিন বেইট গাজা উপত্যকা জুড়ে সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করছে।
 


এক ফোন কল, একটিমাত্র সংখ্যা— আর তাতেই বদলে গেল সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী এক বাংলাদেশি শ্রমিকের ভাগ্য।

দেশটির শেখ জায়েদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালিত শুল্কমুক্ত ‘বিগ টিকেট’ লটারিতে ২০ মিলিয়ন দিরহাম (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬৭ কোটি) জিতেছেন জাহাঙ্গীর আলম (৪৪), পেশায় একজন জাহাজ নির্মাণ শ্রমিক।

কঠোর পরিশ্রমে কাটছিল প্রবাসজীবন, ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাও কম ছিল না। তবে সোমবারের সেই ক্ষণে তার জীবনে এল এক অলৌকিক মোড়। নামাজের মাঝেই এল ভাগ্য বদলের ডাক।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি, আশা নিয়ে ‘বিগ টিকেট’ লটারির কুপন ১৩৪৪৬৯ কিনেছিলেন তিনি। তিন বছর ধরে টিকিট কিনছিলেন, কিন্তু একবারও জেতেননি। তবুও আশা ছাড়েননি।

সোমবার আবুধাবিতে বিগ টিকেটের ড্র অনুষ্ঠিত হয়। জাহাঙ্গীরের নম্বরটি বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, কিন্তু তখন তিনি ছিলেন নামাজে। বারবার ফোন বেজে উঠছিল, কিন্তু তিনি কিছুই জানতেন না।

নামাজ শেষে ফোন হাতে নিতেই চমকে যান— এক বন্ধু উচ্ছ্বাস নিয়ে জানালেন, “তুমি ২০ মিলিয়ন দিরহাম জিতেছ!”

প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে বিগ টিকেট কর্তৃপক্ষের কল পেয়ে নিশ্চিত হলেন— এ স্বপ্ন নয়, সত্যি!

জাহাঙ্গীর একা এই টিকেট কেনেননি— তার সঙ্গে ছিলেন আরও ১৪ বন্ধু। সবাই মিলে ভাগ করে কিনেছিলেন টিকেটটি।

তিনি বলেন, “নামাজের সময় সুসংবাদ এল। আমি বিশ্বাস করি, এটা শুধু আমার জন্য নয়, আমাদের ১৪ জনের জন্য এক বিশেষ রহমত।”

জাহাঙ্গীর জানান, এ অর্থ দিয়ে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে দুবাইতে ব্যবসা শুরু করতে চান। দীর্ঘদিন শ্রমিকের জীবন কাটানো এই মানুষগুলো এখন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

এদিকে, বাংলাদেশে থাকা তার পরিবারও যেন অবিশ্বাসের ঘোরে! প্রবাসজীবনের প্রতিটি কঠিন মুহূর্ত পেছনে ফেলে জাহাঙ্গীর ও তার বন্ধুরা এখন নতুন ভবিষ্যতের অপেক্ষায়।


সুলতান আহমেদ মসজিদ তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিসাহিক স্থাপনাগুলোর একটি, যা ব্লু মসজিদ নামেও পরিচিত। ইস্তাম্বুলে অবস্থিত এই মসজিদ এবার নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে।

দেশ ও বিদেশের ৩৫ জন বিশিষ্ট হাফেজের ইমামতিতে এবার সেখানে অনুষ্ঠিত হবে খতম তারাবি। তুর্কি রীতি অনুসারে পবিত্র রমজানের আগেই সুলতান আহমেদ মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

এ বছর সুলতান আহমেদ মসজিদে তারাবি পড়াবেন রিকাই আল বায়রাক। তিনি আগে এই মসজিদেই কাজ করতেন। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বলেন, এশার ফরজ নামাজ আদায়ের পর ২০ রাকাত তারাবি পড়া হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সময় থেকে দীর্ঘ তিলাওয়াতের সঙ্গে তা আদায়ের রীতি প্রচলিত আছে। 

তিনি আরো বলেন, ‘ইস্তাম্বুল ও তুরস্কের অনেক মসজিদে খতম তারাবি হয়। আমি আগে এখানে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।

আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল যদি ঐতিহাসিক রাজকীয় এই মসজিদে খতম তারাবি চালু করা যেত। আয়া সোফিয়ায় তারাবির নামাজ শুরু হওয়ার পর আমাদের মনে হয়েছে, সুলতান আহমেদ মসজিদে খতম তারাবি শুরু করার এটাই উপযুক্ত সময়। এ ছাড়া সুলতান আহমেদ মসজিদটি আয়া সোফিয়ার প্রতিরূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।’

আল বায়রাক বলেন, সুলতান আহমেদ মসজিদে খতম তারাবির নেতৃত্ব দেবেন ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত হাফেজরা। এতে অংশ নেবেন তুরস্ক ও তুরস্কের বাইরের ৩৫ জন হাফেজ।

তাঁদের অনেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। প্রতিদিন পাঁচজন হাফেজ তারাবি নামাজের ইমামতি করবেন। প্রত্যেকে চার রাকাত নামাজ পড়াবেন এবং প্রত্যেক রাকাতে এক পৃষ্ঠা তিলাওয়াত করবেন। যেহেতু রমজান ২৯ দিনেরও হতে পারে; তাই শেষ দিন দুই পাড়া তিলাওয়াত করা হবে। ইমাম আল বায়রাক সুলতান আহমেদ মসজিদে তারাবির নামাজে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অনেক মানুষ গণমাধ্যমে বিশিষ্ট হাফেজ ও আলেমদের আলোচনা শোনেন। তাঁরা এখানে ৩৫ জন বিশিষ্ট হাফেজের তিলাওয়াত শোনার সুযোগ পাবেন। তাই এই সুযোগটি গ্রহণ করা উচিত।

উল্লেখ্য, ব্লু মসজিদ বা সুলতান আহমেদ মসজিদ তুরস্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা, যা তুর্কি স্থাপত্যরীতির অন্যতম নিদর্শনও বটে। সুলতান প্রথম আহমেদের শাসনামলে ১৬০৯ থেকে ১৬১৭-এর ভেতর তা নির্মিত হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে মসজিদের সংস্কার কাজ হয়েছে। ইউনেসকো ব্লু মসজিদকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করেছে।


তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ৭৫ বছর বয়সি নাজাত এল আঘার ছেলে দিয়া। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও হতাশাই জুটলো মায়ের কপালে।

ছেলে ফিরে আসবে, সেই আনন্দে গাজার বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন নাজাত। যদি কিছু পাওয়া যায়, যা দিয়ে ছেলেকে স্বাগত জানাতে পারেন তিনি।নাজাত বলেন, আমি গাজার ওমার আল মুখতার স্ট্রিটে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম, কীই বা দিতে পারি আমার ছেলেকে? জামা-কাপড়ে ভরে ফেলি ব্যাগ, টুথপিকও ভরেছিলাম ব্যাগে।

শনিবার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলি বন্দিদের বিনিময়ে যেসব ফিলিস্তিনি বন্দিকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল, সেই তালিকায় ছিল দিয়ার নামও।

১২ ঘণ্টা ধরে গাজার ইউরোপিয়ান হাসপাতালে বন্দি বিনিময়ের স্থানে অপেক্ষা করেন নাজাত। কিন্তু ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ফেরত পাঠালেও নাজাতের ছেলে দিয়াকে পাঠায়নি ইসরাইল। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাকি বন্দিদের মুক্ত করার আগে ইসরাইলি বন্দিদেরও মুক্ত করা হবে এমন নিশ্চয়তা চায় তারা।

এই খবর পাওয়ার মুহূর্ত থেকে নিজের আবেগ সামলাতে পারছেন না সদ্য ৫০ বছর পেরোনো দিয়ার মা নাজাত।

তিনি বলেন, আমি সব কিছু তার জন্য প্রস্তুত করেছি, তবুও সে মুক্তি পেল না। আমাকে তারা বাধ্য করে বাসায় ফিরে যেতে, কিন্তু আমি চাইছিলাম সেখানেই বসে থাকি, যত দিন না দিয়া মুক্তি পায়।

আশা, হতাশা ও ধৈর্যের পরীক্ষা

১৯৯২ সালে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক কর্মকর্তাকে মারার কারণে কারাবন্দি হন দিয়া এল আঘা। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলি কারাবাসে থাকা ১৮ ফিলিস্তিনি বন্দির একজন তিনি।

এত দীর্ঘসময় বন্দি থাকতে থাকতেই তিনি হারান নিজের বাবা ও বোনকে। কারাগারে তাকে ডাকা হয় ‘বন্দিদের অধ্যক্ষ’ নামে। হামাস সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে ইসরাইলি বন্দিদের ফেরত পাঠিয়েছে, তাকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে। ইসরাইলের মতে, এভাবে ফেরত পাঠানো বন্দিদের জন্য রীতিমতো অসম্মানজনক ছিল।

ভিড়ের মাঝে স্টেজের ওপর বন্দিদের তুলে তারপর তাদের ফেরত পাঠানো হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্দিদের দেহাবশেষ থাকা কফিনও ভিড়ের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, আরও ৬৩ জন বন্দি থাকার কথা গাজায়, যাদের মুক্তি দেওয়ার কথা আছে এই চুক্তিতে। তাদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন বন্দির জীবিত থাকার কথা জানা গেছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আশা ছাড়ছেন না নাজাত। ইসরাইলি হামলায় ভেঙে পড়া তার বাসার গায়ে এখনো ঝুলছে একটি সাইনবোর্ড, যার গায়ে লেখা ‘এটা বন্দি দিয়া জাকারিয়া এল আঘার বাসস্থান।’

সূত্র: ডয়চে ভেলে


ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চলের একটি বালুর ঢিবি থেকে ৬৬ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বালুর ঢিবিটি ইসরাইলি সেনাবাহিনী তৈরি করেছিল। 

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলগুলো উত্তর গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর তৈরি একটি বালুর ঢিবি থেকে ৬৬ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করেছে। 

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, ‘ইসরাইলের বুলডোজিং অভিযানের কারণে গাজা শহর এবং উত্তরের বেশ কয়েকটি এলাকায় আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনীর ব্যবহার করা বালুর ঢিবির নিচে ফিলিস্তিনিদের কবর দিয়েছিল তারা।’

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় ৩৭টি এবং গাজা শহরের শাতি শরণার্থী শিবিরে ২৯ জনের লাশ পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক কবর এখনও আবিষ্কৃত হয়নি, কারণ ইসরাইলি অভিযানের কারণে ফিলিস্তিনিরা সেসময় মৃতদের রাস্তায়, স্কোয়ার এবং পাবলিক পার্কে কবর দিতে বাধ্য হয়েছিল। সিভিল ডিফেন্স টিম এবং মেডিকেল ক্রুরা সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও ধ্বংসস্তূপ এবং বালুর ঢিবির নিচ থেকে লাশ উদ্ধারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।’

গাজার এই বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র বলেছেন, গাজায় ঝোড়ো আবহাওয়া গাজাজুড়ে বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের কয়েক ডজন তাঁবু উড়িয়ে নিয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির পানি অনেক তাঁবুকে প্লাবিত করেছে।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের থাকার জন্য গাজায় জরুরিভাবে ১ লাখ ২০ হাজার তাঁবুর প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত গাজায় প্রবেশ করা তাঁবুগুলো সংখ্যাগত পরিমাণ বা মানের দিক থেকে ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করছে না এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা যেসব পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন সেগুলো মোকাবিলার জন্যও অনুপযুক্ত।’


সৌদি আরব বলেছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়বে না। সৌদি আরব ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি জানাচ্ছে না বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর আজ বুধবার এক বিবৃতিতে এই কথা বলেছে রিয়াদ।

রয়টার্স ফাইল ছবি:সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

ট্রাম্প গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ফিলিস্তিনিরা অন্য জায়গায় পুনর্বাসিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং সেখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবে। সফররত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল বিষয়ে ‘সুস্পষ্টভাবে’ সৌদি আরবের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে কোনো পরিস্থিতিতেই ব্যাখ্যার কোনো দরকার নেই।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখণ্ড থেকে বাস্তুচ্যুত করার কোনো চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের অবস্থানের বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রাম্পের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিলে ইসরায়েল সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবে এবং সফল হবে।

সৌদি আরবকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এবং দেশটিকে স্বীকৃতি দেওয়াতে কয়েক মাসের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত এই তৎপরতা চলেছে। তবে গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর আরব দেশগুলোর ক্ষোভের মুখে বিষয়টি স্থগিত করে সৌদি আরব।


দীর্ঘ পাঁচ বছর পর গত বোরবার (২ ফেব্রুয়ারি) মক্কার মসজিদে হারামে আসারের নামাজের ইমামতি করেন শায়খ আবদুর রহমান আস সুদাইস। তিনি সাধারণত মাগরিব, এশা ও জুমার নামাজের ইমামতি বেশি করেন। ওই দিন আসরের নামাজ পড়ানোর মধ্য দিয়ে কাবার ইমাম হিসেবে ৪২ বছর পূরণ করলেন।

ছবি:শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস (সংগৃহীত)|

১৪০৪ হিজরি অর্থাৎ ১৯৮৪ সালের তিনি মসজিদে হারামে প্রথমবারের মতো আসরের নামাজের ইমামতি করেন।

বিশ্বজুড়ে মসজিদে হারামের ইমামদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত নাম শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস। পবিত্র কোরআনের সুললিত তেলাওয়াতের জন্য বিশ্বের মুসলিমদের কাছে তিনি পরিচিত। সুদীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে ইসলামের প্রধান সম্মানিত এই স্থানের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

শায়খ সুদাইস মাত্র ২২ বয়সে ১৪০৪ হিজরি মোতাবেক ১৯৮৪ সালের মে মাসে মসজিদে হারামের খতিব ও ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে তিনি প্রধান ইমাম হন। সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজের এক রাজকীয় নির্দেশনায় তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। মসজিদে হারামের সবচেয়ে কম বয়সী ইমাম হিসেবে সর্বপ্রথম তিনি আসর নামাজের ইমামতি করেন।

২০১২ সাল মোতাবেক ১৪৩৩ হিজরিতে সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। পবিত্র দুই মসজিদ পরিচালনা পরিষদের প্রধান হিসেবে ২০১৪ সালে তিনি মসজিদে নববিতে প্রথম বার ইমামতি করেন। ২০২০ সালে মসজিদে হারামে তার ইমামতিতে তারাবির নামাজে কোরআন খতমের ৩০তম বছর পূর্ণ হয়। কোরআন খতম উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো তখনও সুন্দর কণ্ঠে দীর্ঘ সময় দোয়া করেন।

শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৩৭৯ হিজরি মোতাবেক ১৯৬০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের কাসিম অঞ্চলের বুকাইরায় জন্মগ্রহণ করেন। বনু আসাদ বিন রবিয়া বিন নাজার গোত্রের আনজা শাখার সন্তান তিনি। তার বাবার নাম আবদুল আজিজ ও মায়ের নাম ফাহদা রউফ। কাসিমে বেড়ে উঠলেও পরবর্তীতে রিয়াদে পাড়ি জমান তিনি। শৈশব থেকেই উত্তম আচার-ব্যবহারের জন্য পরিচিত ছিলেন তিনি।

শায়খ সুদাইস বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় মাত্র ১২ বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করেন। এরপর রিয়াদের মুসান্না বিন হারেসা ইবতেদায়ি মাদরাসায় প্রাথমিক পড়াশোনা করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি মাহাদ আল-রিয়াদ আল-ইলমি থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।

১৯৮৭ সালে ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুলুল ফিকাহ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডের বর্ষসেরা ইসলামি ব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে তিনি হজের খুতবা প্রদান করেন।
 


অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে বহু ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর আগে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। 

ছবি : ইসরায়েলি হামলার ওপর জেনিনে কালো ধোঁয়া উড়ছে (সংগৃহীত)|

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, রোববার জেনিনে ২৩টি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ভবনে সন্ত্রাসী স্থাপনা তৈরি ঠেকাতে ধ্বংস করা হয়। 

এ ছাড়া গত মাঝ জানুয়ারি থেকে পশ্চিম তীরে ৫০ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হতা করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আল জাজিরার করেসপন্ডেন্টরা জানান, বিস্ফোরণে একটি আবাসিক ব্লকে উড়িয়ে দেওয়া হয়। ফিলিস্তিনের নিউজ এজেন্সি ওয়াফা জানিয়েছে, বিস্ফোরণ এতো বিকট ছিলে আশেপাশের এবং পুরো শহরজুড়ে শব্দ শোনা গেছে। 

জেনিনের বাসিন্দা হেন্না আল হাজ হাসান আল জাজিরাকে বলেছেন, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল ভয়াবহ। হাসান ও জেনিনের বাসিন্দারা জানান, তারা গত দুই সপ্তাহ ধরে যুদ্ধের মুখোমুখি।   

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জেনিনে ভবন ধ্বংসের নিন্দা জানিয়েছে। তারা একে নৃশংস দৃশ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে। গত মাসের ১৯ তারিখ থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর পশ্চিম তীরে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। 


মুক্তির জন্য আরও চারজন ইসরায়েলি জিম্মির নাম জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। স্থানীয় সময় আজ শনিবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে।

কারিনা আরিয়েভ, নামা লেভি, দানিয়েলা গিলবোয়া ও লিরি আলবাগ। (ওপরে বাঁ থেকে ঘড়ির কাঁটা অনুসারে) ফাইল ছবি: সংগৃহীত।

এই চারজন হলেন ইসরায়েলি সেনা কারিনা আরিয়েভ, দানিয়েলা গিলবোয়া, নামা লেভি ও লিরি আলবাগ। তাঁরা সবাই ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে নজরদারির কাজে নিয়োজিত একটি ইউনিটের অংশ ছিলেন। 

গত এক বছরের বেশী সময় ধরে এই চার জন ইসরায়েলি সেনা হামাসের হাতে বন্দি। নারী সেনাদের দিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে হামাস। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে,  ইসরায়েলের কারাগারে আটক ১৮০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে এই ৪ জন জিম্মিকে ছেড়ে দিচ্ছে হামাস।

আগামী পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে হামাস পর্যায়ক্রমে ২৬ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। 

 


মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে কটূক্তির দায়ে ইরানের জনপ্রিয় পপ সংগীত শিল্পী আমির হোসেন মাগসোদলুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) এ তথ্য জানায় ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো।

ছবি :পপ সংগীত শিল্পী আমির হোসেন মাগসোদলু

সংস্কারবাদী সংবাদমাধ্যম ইতেমাদ বলেছে, “ধর্মীয় অবমাননাসহ অন্যান্য অপরাধে তাকে পাঁচ বছরের যে দণ্ড দেওয়া হয়েছিল সেটিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন প্রসিকিউটিররা। তাদের আপত্তির বিষয়টি গ্রহণ করেন সুপ্রিম কোর্ট। তার বিরুদ্ধে মামলাটি পুনরায় চালু করা হয়। এবং মহানবীকে কটূক্তির দায়ে অভিযুক্তকে এবার মৃত্যদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”তবে এই দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন এই গায়ক।

৩৭ বছর বয়সী আমির হোসেন ২০১৮ সাল থেকে তুরস্কে বসবাস করছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তাকে ইরানের হাতে তুলে দেয় তার্কিস পুলিশ। এরপর থেকে কারাগারে বন্দি আছেন তিনি।

শরীরে অসংখ্য ট্যাটু থাকায় আমির হোসেন তার ভক্তদের মাঝে টাটালু নামেও পরিচিত। পতিতাবৃত্তি প্রচারের দায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া কূরুচিপূর্ণ কনটেন্ট প্রচার এবং ইসলামিক রিপাবলিকের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানোর অভিযোগেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

২০১৭ সালে ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন এই গায়ক। রাইসি গত বছর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন।

২০১৫ সালের ইরানের পারমাণবিক চুক্তির পক্ষে একটি গান গেয়েছিলেন তিনি। যেটি পরবর্তীতে ২০১৮ সালে বাতিল করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
 


যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় প্রবেশ করছে জরুরি ত্রাণবাহী ট্রাক। ইসরায়েলের দক্ষিণে কারেম শালম ও উত্তরের জিকিম সীমান্ত দিয়ে ত্রাণ নিয়ে গাজায় প্রবেশ করছে দুশ’রও বেশি ট্রাক, এমনটাই জানিয়েছে আরব নিউজ। 

ছবি: গাজায় ঢুকছে ত্রাণবাহী ট্রাক (সংগৃহীত)।

জাতিসংঘের দেয়া এসব ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ক্যানজাতীয় খাবার, আটা, জ্বালানিসহ জরুরি ওষুধপণ্য। ত্রাণ প্রবেশ করছে মিশর, জর্ডান ও ইসরায়েলের অন্যান্য সীমান্ত দিয়েও।যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ফিলিস্তিনে প্রবেশ করবে ত্রাণ সামগ্রী ভর্তি ৬০০টি ট্রাক। এর মাঝে ৫০টিতে থাকবে প্রয়োজনীয় জ্বালানি। এদিকে, সবচেয়ে বেশি মানবেতর সময় কাটানো গাজার উত্তরের এলাকাগুলোয় প্রতিদিন পৌঁছাবে ত্রাণভর্তি ৩০০ ট্রাক।


যুদ্ধবাজ বলে পরিচিত, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন গাভীর পদত্যাগ করেছেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) মন্ত্রিসভায় পদত্যাগপত্র জমান দেন তিনি।

ছবি: বেন গাভীর (ফাইল ছবি)।

যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহুর জোট সরকার থেকেও সরে যাচ্ছে বেন গাভীরের কট্টর ডানপন্থি দল- জিউইশ পাওয়ার পার্টি। একইসাথে, পদত্যাগ করবেন দলটির আরও কয়েকজন মন্ত্রী। রোববার, সরকারের কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেয়ার কথা তাদের। হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জেরে এ সিদ্ধান্ত নেন উগ্র ডানপন্থি নেতা গাভী। বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন না দিতে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটকে হুমকি দেন তিনি।

তবে বেন গাভীর এবং তার দল জোট থেকে সরে গেলেই যে, খুব একটা বিপাকে পড়বে নেতানিয়াহু সরকার, ব্যাপারটা এমন নয়। কারণ জেপিপি’র অধীনে ছিল মাত্র ৬টি আসন। নেতানিয়াহুর জোট সরকারের আসন সংখ্যা ৬৮ থেকে কমে দাঁড়াবে ৬২-তে। যা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যথেষ্ট।


গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রথম দিনে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। জিম্মিদের রেডক্রসের হাতে তুলে দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও ওই তিন জিম্মির মুক্তির তথ্য জানিয়েছে।

জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া ওই তিনজন হলেন– ২৪ বছর বয়সী রোমি গোনেন ২৪, ডোরন স্টেইনব্রেচার (৩১) ও ২৮ বছর বয়সী এমিলি দামারি। এই জিম্মিদের ফেরত আনতে রেডক্রসের একটি দল দুপুরেই গাজার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তাদের মাধ্যমেই ওই তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, রোববার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দিনে তিন নারী জিম্মিকে মুক্তি দিলো হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ছাড়া পাবে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দি। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।


কারাগারে বন্দী থাকা ৯০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল রোববার তাদের মুক্তি দেয়া হয়। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের দিন চুক্তির শর্ত মেনে, মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিরা সবাই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের কারাগার থেকে যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন খালিদা জাররার। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ও অধিকৃত পশ্চিম তীরের পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) নেতা। খালিদা একসময় ফিলিস্তিনি পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। নির্জন কারাকক্ষে রেখে তাকে নির্যাতন করত ইসরায়েল। মুক্তির পর খালিদা জাররার শীর্ণ চেহারা প্রমাণ করে কতটা বর্বর ইসরায়েল। যারা কিনা আন্তর্জাতিক আইনের কখনোই কোন তোয়াক্কা করে না।