›জাতীয়›দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম
বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। স্কোর হিসাবে বিগত ১৩ বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন।

দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ২৩। সমান স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে কঙ্গো ও ইরান। তালিকার উচ্চক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশ ১৫১তম অবস্থানে রয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় ধানমন্ডি টিআইবির কার্যালয়ে দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই)-২০২৪ উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. মো ইফেতারুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সিপিআই ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ২৩। যা বিগত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ বছর স্কোর বিবেচনায় উচ্চক্রম অনুসারে দুই ধাপ অবনতি হয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫১তম এবং নিম্নক্রম অনুসারে ১৪তম। একই স্কোর নিয়ে তালিকার উচ্চক্রম অনুযায়ী বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ১৫১তম অবস্থানে রয়েছে কঙ্গো ও ইরান। দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তান ১৭ পয়েন্ট নিয়ে সর্বনিম্ন স্কোর ও অবস্থানে রয়েছে। এ অঞ্চলে আফগানিস্তানের পরই বাংলাদেশের স্কোর ও অবস্থান দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।
ইফেতাখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের এ বছরের নিম্ন স্কোর ও অবস্থান প্রমাণ করে যে, বিগত ১৩ বছর কর্তৃত্ববাদী সরকার মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও, বাস্তবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে, লালন করেছে, এমনকি দুর্নীতি সংঘটনে সহায়তা ও অংশগ্রহণ করেছে। এর প্রভাবে যথেচ্ছ লুটপাট, দুর্নীতিবাজদের রাষ্ট্রীয়ভাবে তোষণ, আইনের সঠিক প্রয়োগ না করা এবং সার্বিক কাঠামোগত দুর্বলতায় বাংলাদেশের অবস্থানের ক্রম অবনতি হয়েছে। অথচ দুর্নীতিবিরোধী বাগাড়ম্বর ব্যতীত এ নিয়ে পতিত আওয়ামী সরকারের কোনো বিকার বা চিন্তা দেখা যায়নি। এমনকি দুর্নীতি দমনে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের প্রকৃত ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত বছর বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম ছিল। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ২৪। সমান স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একইঅবস্থানে ছিল আফ্রিকান রিপাবলিক, ইরান, লেবানন ও জিম্বাবুয়ে। আর ২০২৩ সালে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম। বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৫।
টিআই এমন সময় সিপিআই সূচক প্রকাশ করেছে যখন দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। ১৯৯৫ সাল থেকে বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দ্বারা প্রতি বছর এই সূচক প্রকাশ করা হয়। ২০০১ সালে বাংলাদেশ প্রথম তালিকাভুক্ত হয়। তখন এ তালিকায় মোট ৯১টি দেশ ঠাঁই পায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।